নরসিংদী-ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার মেঘনা নদীতে প্রকাশ্যে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০ টার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের মুরাদনগর গ্রাম থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দক্ষিণে মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
আলোকবালী ইউনিয়ন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইউসুফ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ঈদের কেনাকাটা উপলক্ষে নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের মুরাদনগর গ্রামের প্রায় ৫০-৬০ জন ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ বাজারের উদ্দেশ্যে ট্রলারযোগে রওয়ানা দেয়। এ সময় ট্রলারটি নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ও মুরাদনগর এলাকার সীমানায় মেঘনা নদীর চারটি শাখা নদীর সংযোগস্থলে পৌছালে, ১০-১২ জন ডাকাতের একটি দল স্পিডবোড নিয়ে তাদের গতিরোধ করে নগদ টাকা, মোবাইল এবং স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
মুরাদনগর গ্রামের ভুক্তভোগী শেফালি বেগম(৪৮) বলেন, ” আমার কানের দুল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতরা নিয়ে গেছে। আমি ঈদ উপলক্ষে পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে গিয়েছিলাম। ডাকাতদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল এবং কেউ তাদের ভয়ে প্রতিবাদ করেনি। যার সাথে যা ছিলো সব কিছু নিয়ে গেছে।”
আরেক ভুক্তভোগী বকশালীপুর গ্রামের বাবুল মিয়া (৪০) বলেন, ” আমার সাথে দামি মোবাইল ছিল এবং পরিবারের জন্য কেনাকাটার জন্য ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ৫০ হাজার টাকা নগদ ছিলো। আমার ন্যায় অন্যান্য ব্যক্তিদের কাছে থেকে ফিল্ম স্টাইলে টাকা লুট করে নিয়ে যায়। তাদের কাউকে চিনতে পারিনি, তবে তাদের মুখে মুখোশ ছিল না। বড় ধরনের স্পিডবোডে দুটি ইঞ্জিন লাগানো ছিলো। ডাকাতির কাজ শেষ করে দ্রুত গতিতে চরমধুয়া এলাকার দিকে পালিতে গেছে।
ডাকাতির কবলে পড়া ট্রলারের মাঝি বকুল মিয়া (৫৩) বলেন, “আমার ট্রলারে প্রায় ৫০-৬০ জন যাত্রী ছিলো। মুরাদনগর এলাকা থেকে সলিমগঞ্জ এলাকার উদ্দ্যেশ্যে সকাল ১০ টার দিকে রওনা দিলে নবীনগর ও নরসিংদীর মুরাদনগর এলাকার মাঝখানে মেঘনা নদীতে আটকিয়ে রেখে আমার যাত্রীদের সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে , সলিমগঞ্জ বাজারে না গিয়ে ট্রলার চালিয়ে আমরা গ্রামে ফিরে আসি।”
তিনি আরও বলেন, ” জনপ্রতি ভাড়া বাবদ ৩০ টাকা নেয়া হতো। ডাকাতির পর তারাও নিস্ব, তাদের ন্যায় আমিও নিস্ব।”
আলোকবালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইউসুফ আলী বলেন, ” আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যে এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, সে এলাকাটি আমাদের জোনের আওতাভুক্ত নয়। এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার আওতাভুক্ত। তাই আমাদের জোনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবো না।
নবীনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল মিয়া বলেন, ” ঘটনাস্থল আমাদের জোনের ভিতরে নয়। এটির নরসিংদীর রায়পুরা থানার অধীনে। তারপরও খোঁজ খবরে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
নরসিংদী মিরর/এফএ