নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রভাবশালী এক আইনজীবীর দায়ের করা মামলায় পাঁচদিন ধরে জেলের ঘানি টানছেন
নিরীহ ছয় ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চরমান্দালিয়া গ্রামে। মামলার বাদী চরমান্দালিয়া ইউনিয়নের আব্দুল মতিনের ছেলে অ্যাডভোকেট মো. শফিকুর রহমান মিলন। তিনি নরসিংদী জজ আদালতের আইনজীবী। ভূক্তভোগীরা হলেন একই গ্রামের জামির উদ্দিনের ছেলে দুদু মিয়া, রবি মিয়া, আব্দুর রহমান, বজলুর রহমান, ফজলুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ এবং ফালু মিয়ার ছেলে ইসমাইল হক।
ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, শফিকুর রহমান ও তার পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে তাদের জমিজমা জোরপূর্বক ভোগ দখল করে আসছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে ওই পরিবারের উপর অত্যাচার নির্যাতন করে। এমনকি নিজের সম্পত্তির উপর ঘর নির্মাণ করতে গেলে সেখানেও বাধা দেয় আইনজীবী ও তার ভাইয়েরা। এসব নির্যাতন দেখে প্রতিবেশীর পরামর্শমতে জমির কাগজপত্র ঘেটে জানতে পারেন তাদের প্রায় দুই বিঘা জমি শফিকুর রহমান ও তার ভাইদের দখলে রয়েছে। এসব জমির দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদেরকে অনুরোধ করলে তারা গালাগাল ও মারধরের হুমকী দেয়। এরই জের ধরে গত ১২ মার্চ সকালে ভূক্তভোগীদের জমির উপর ইটের প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করে। বাঁধা দিতে গেলে তারা প্রাণনাশের হুমকী দেয়। বিষয়টি মনোহরদী থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। দুইদিন পর গত সোমবার দিন-দুপুরে অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমানের ভাই সাবেক চেয়ারম্যান আদিলুর রহমান কনকের নেতৃত্বে শতাধিক সদস্যের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দুদু মিয়া ও তার ভাইদের জায়গার স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়। এর আগে ১২ মার্চ শফিকুর রহমান বাদী হয়ে আটজনকে আসামী করে জমি দখল ও চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে নরসিংদী আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। সোমবার রাতে পুলিশ তাদেরকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন।
ভূক্তভোগী ফজলুর রহমানের মেয়ে কুলসুম বলেন, ‘আমার বাবা এবং চাচাকে মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে পাঠিয়েছে শফিকুর রহমান। এখন আবার আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করবে বলেও হুমকী দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান মিলনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি আমাদের দখলে রয়েছে। জমির সকল কাগজপত্র আমাদের পক্ষে আছে। বাড়াবাড়ি করলে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করবো।’
চরমান্দালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির বলেন, ‘যারা জেল হাজতে রয়েছেন তারা খুবই গরীব মানুষ। তাদের এই বিরোধ মিমাংশা করার জন্য উভয় পক্ষকে বসার জন্য অনুরোধ করেছিলাম।’
মনোহরদী থানার ওসি মো. আনিচুর রহমান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে ছয় আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’