নরসিংদীর রায়পুরার পলাশতলীতে বোরো ধানের চাষে যুক্ত হলো আধুনিক যন্ত্র ট্রান্সপ্লান্ট মেশিন। এখানকার কৃষকরা আশা করছেন নতুন এই প্রযুক্তিতে কমবে আসবে ধানের উৎপাদন খরচ সেই সাথে বাড়বে মুনাফা।
নরসিংদীর কৃষি প্রযুক্তিতে নতুন করে যুক্ত হলো ৩টি রাইস ট্রান্সপ্লান্ট মেশিন। সেই সাথে এই মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক শুরু হয়েছে বোরো ধানের চাষ। কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এই পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, নতুন এই প্রযুক্তি ও পদ্ধতির সহায়তায় উৎপাদন খরচ কমবে, বাড়বে উৎপাদন।
সারাদেশে ৬১টি জেলার পাশাপাশি রায়পুরা উপজেলায় কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বোরো ধানের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। উপজেলার পলাশতলী ইউনিয়নের খাকচক মাঠে আধুনিক যন্ত্র রাইস প্লান্টারের মাধ্যমে ৫০ একর জমিতে হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে।
এতে কৃষকের ধান কাটার সময় ও ধান মাড়াই হবে আধুনিক যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে। প্রযুক্তির এমন ব্যবহারে খুশি চাষীরা।
চাষীরা বলেন, আগে ধান লাগানো থেকে শুরু করে বাড়ি নেয়া পর্যন্ত আমাদের ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হতো।
এখন মেশিন ব্যবহারের ফলে ৫-৬ হাজার টাকা খরচ হবে। একবিঘা জমিতে ধান রোপণ করতে ৫ জন লোক লাগতো, এখন মেশিন দিয়ে রোপণের ফলে শ্রমিক কম লাগছে। এই মেশিন দিয়ে ঘণ্টায় ৩০ শতাংশ বেশি জমিতে রোপণ করা যায় এবং এর তেল খরচও কম।
মেশিনে চাষাবাদ হওয়ায় খরচ তুলনামূলক কম। পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহারে হেক্টর প্রতি সাড়ে ১০ টন ফলন পাওয়া যাবে, বলছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
কৃষকের কাছে মেশিনগুলো সহজলভ্য করতে ও কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
মেশিনে চাষাবাদ হওয়ায় খরচ তুলনামূলক কমার পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহারে হেক্টর প্রতি সাড়ে ১০ টন ফলনসহ সফলতা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ। নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শোভন কুমার ধর বলেন, ‘বোরো ধান লাগানো ও কাটার সময় শ্রমিকের যে সংকট হয়, সে সংকট লাঘব হবে। কারণ যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে খরচ অনেক বাঁচানো সম্ভব হবে।’
কৃষকদের কাছে এসব মেশিন সহজলভ্য করতে ও কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস নরসিংদী জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইনের। তিনি বলেন, ‘সময় কম লাগে, ফলন বেশি হয় আর বিঘা প্রতি খরচ কম পড়ে। সেক্ষেত্রে মান উন্নয়ন অনিবার্য। প্রতি কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমরা চাহিদাভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমাদের সে ধরনের ব্যবস্থাপনা রয়েছে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার যে প্রকল্প থেকে কৃষকদের জন্য ৫০ ভাগ ভর্তুকিমূল্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছে কৃষি কর্মর্কতারা।