“মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দীক্ষা” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নরসিংদীর মনোহরদীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ল্যাপটপ বিতরণ ও সবার জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৪ মে) দুপুরে মনোহরদীর জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিল্পমন্ত্রী এ্যাড. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে ল্যাপটপ হস্তান্তর করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপহার হিসেবে উপজেলার ১৪৬ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম দফায় ১১৪ টি বিদ্যালয়ে ও আজকে ৫৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে মানসম্মত শিক্ষা সহায়ক ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমেদ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব শাহ আলম মুকুল।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, পৌর মেয়র আমিনুর রশিদ সুজন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বায়েজিদ খান, মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক প্রিয়াশীষ রায়, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী, জেলা পরিষদ সদস্য ইশরাত জাহান তামান্না, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এম. এস ইকবাল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজ সুলতানা রুবী, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন ভূইয়াসহ সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বৃন্দ।
আলোচনা সভায় শিল্পমন্ত্রী এ্যাড. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিন-রাত দেশের উন্নয়নের জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তার নিরলস প্রচেষ্ঠায় শিক্ষার আধুনিকায়নে সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছে। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সবচেয়ে বেশি কাজ করা হয়েছে। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আধুনিক ভবন করে দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোতে স্মার্ট ক্লাসরুম, ডিজিটাল ক্লাসরুম হোয়াইট বোর্ড ও প্রজেক্টের এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে মানসম্মত শিক্ষা পেয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে তার প্রতিটি ব্যবস্থা স্কুলগুলোতে করে দেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হবে। তাহলে তারা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। করোনার কারণে অর্থ সংকট থাকলেও আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাইলে তিনি আমাদের খালি হাতে ফেরান না। তিনি প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে ব্যপক বরাদ্ধ দিয়েছে। ইতিমধ্যে আরো ২০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারীকরণে সম্মতি দিয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষাকে সরকার ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। বিদ্যালয়গুলোকে ইতিমধ্যে আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করে তোলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পুষ্টির জন্য বিদ্যালয়গুলোতে স্কুল মিল্ক ফিডিং কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। শিক্ষকরা যাতে কারিকুলামে পারদর্শী হতে পারে এজন্য ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ময়মনসিংহের ট্রেনিং সেন্টার ভবনের আধুনিকায়নের কাজ চলছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্ট আইনের মাধ্যমে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। যেখান থেকে প্রতিমাসে দুই হাজার শিক্ষক সর্বনিম্ম ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগীতা পাবে।’
জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা খুবই মেধাবী। তারা আমাদের বাচ্চাদের খুবই যত্নের সাথে পড়ালেখা করিয়ে থাকে। তাদের কাছ থেকেই বাচ্চারা ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার প্রেরণা পায়। তাই জেলা প্রশাসন শিক্ষকদের পাশে সবসময় আছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নে আমাদের সকলের সহযোগীতা অব্যহত থাকবে।’
নরসিংদী মিরর/এফএ