আন্দোলন-সংগ্রামের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তারেক রহমান: খায়রুল কবির খোকন

আগের সংবাদ

দখল করে নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ফিরে পাচ্ছে জামায়াত

পরের সংবাদ

মনোহরদীর বিতর্কিত ইউএনও হাছিবা গোপালগঞ্জে বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৪ , ৯:০০ পূর্বাহ্ণ

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার বিতর্কিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাছিবা খানকে গোপালগঞ্জ সদরে বদলি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়।

এর আগে, তার বিভিন্ন অনিয়ম, আওয়ামী ঘনিষ্ঠতা ও স্বৈরাচারী ভাবধারার নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত ১ নভেম্বর ‘রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সভা সমাবেশের প্রতিবন্ধক হয়ে উঠছেন কি মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান?’ শিরোনামে নরসিংদী মিররে সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

মনোহরদীতে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চিত বিএনপির সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা গণ সমাবেশের আয়োজন করছে। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নতুন গণসংযোগ তৈরি হচ্ছে। পিছিয়ে নেই জামায়াতে ইসলামীও। মুক্ত পরিবেশে প্রতি ইউনিয়নে চলছে গণসংযোগ, সমাবেশ।

কিন্তু এমন উন্মুক্ত পরিবেশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সভা সমাবেশ আয়োজনের সুযোগ থমকে দেয়ার নতুন চিন্তার ঘনঘটা তৈরি করে ইউএনও হাছিবা খান। জারি করেন নতুন নির্দেশনা।

এই নির্দেশনা জনমনে প্রশ্ন তৈরি করে। দীর্ঘ সময় পর উন্মুক্ত সভা সমাবেশের উচ্ছ্বাস হয় প্রশ্নবিদ্ধ। উন্মুক্ত পরিবেশে স্কুল-কলেজের মাঠ ব্যবহার করে যে কোন সভা সমাবেশ আয়োজনে ‘পূর্ব অনুমতির’ নির্দেশনা জারি করেন হাসিবা খান। যে প্রক্রিয়ায় বিগত সময়ে স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছিল মানুষের রাজনৈতিক অধিকার। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দুই মাস না যেতেই স্থানীয় প্রশাসনের এমন নির্দেশনা জনগণের মনে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেও শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা।

ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের প্রজ্ঞাপন।

তাছাড়া দুর্নীতিসহ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে উঠেছে ইউএনও -এর বিরুদ্ধে। জেলা প্রশাসন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে স্থানীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে। ইউএনও-কে পতিত স্বৈরাচারের দোসর বলেও আখ্যা দিচ্ছেন অনেকে।

এদিকে বিগত সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ইউএনও হাসিবা খানের বিরুদ্ধে। গত জাতীয় নির্বাচনের শিল্পমন্ত্রীর কাছ থেকে ৯০ লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ, উপজেলা নির্বাচনে অবৈধ লেনদেন ও অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে ইটভাটা এবং বাজার কমিটি থেকে বিভিন্ন দিবসে চাঁদাবাজির অভিযোগও করা হয়। মনোহরদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী শরিফুল ইসলামের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ দায়ের করে গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখ জেলা প্রশাসন বরাবর চিঠি দেয়া হয়। সর্বশেষ গত ১৪ অক্টোবর মন্ত্রীপরিষদ সচিব বরাবর একই অভিযোগ দাখিল করেছেন মনোহরদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি মনোহরদীতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ইউএনও ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসিল্যান্ড হিসিবে কর্মরত ছিলেন তিনি। তার স্বামী আবু সাঈদ শামীম শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে কর্মরত। শেখ হাসিনার সময়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিতে যোগদান করেন ৩৪ বিসিএসের এ কর্মকর্তা।

নরসিংদী মিরর/এফএ