নরসিংদীর সদর উপজেলার শীলমান্দিতে টেক্সাইল মিলের এক শ্রমিককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ওই শ্রমিককে ধর্ষণের ঘটনায় দুইজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই ঘটনায় সোমবার রাতে ওই শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখসহ তিনজনকে আসামী করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন। ওই নির্যাতিতা নারী স্থানীয় একটি টেক্সটাইল মিলে শ্রমিকের কাজ করেন।
এর আগে শনিবার রাত ১০টার দিকে কাজের উদ্যেশ্যে টেক্সটাইল মিলে যাওয়ার সময় ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রোববার রাতে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে সোমবার সকালে নরসিংদীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সাহায্য চান। পরে সোমবার দুপুরে শীলমান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই ধর্ষককে আটকের পর রাতে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন ওই কিশোরীর বাবা।
এই ঘটনায় গ্রেপ্তার দুইজন হলেন, সদর উপজেলার শীলমান্দির দক্ষিন শীলমান্দি এলাকার মো. আমীর হোসেনের ছেলে মো. জামান মিয়া (৩০) এবং আব্দুল মান্নান ভূইয়ার ছেলে উসমান ভূইয়া (৩২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ অক্টোবর শনিবার রাত ১০টার দিকে রাতের শিফটে কাজ করতে টেক্সটাইল মিলে যাওয়ার জন্য রওনা হন ওই নারী। পাঁচমিনিট হাঁটার পর জামান মিয়া ও উসমান ভূইয়া ওই নারীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে অন্য একটি টেক্সটাইল মিলের ফাঁকা জায়গায় বাঁশবাগানের ভেতর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় অজ্ঞাতনামা আরও একজন আসামী তাদের পাহারা দিচ্ছিলো। ধর্ষণের পর আসামীরা চলে যাওয়ার সময় এই বলে হুমকি দেয়, ঘটনা জানাজানি হলে তাকে হত্যা এবং তার বড় বোনকেও ধর্ষণ করা হবে।
পরে ওই কিশোরী আর ডিউটিতে না গিয়ে বাসায় চলে যায় এবং কান্নাকাটি শুরু করে। এ সময় পরিবারের সদস্যরা তার পরনের কাপড় ছেড়া কেন জানতে চাইলে সে ভয়ে আরও কান্নাকাটি করে কিন্তু আসামীদের নাম প্রকাশ করেনি। তবে পরদিন তার ফুপু ও এক বান্ধবীর কাছে ধর্ষনের ঘটনাটি জানায় এবং আসামীদের নাম প্রকাশ করে।
মামলার বাদী ও ওই কিশোরীর বাবা জানায়, ১৮ তারিখ রবিবার রাত ১১টার পরে আমার বড় ছেলের স্ত্রী আমাকে ফোন করে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় এবং তাড়াতাড়ি বাড়ি আসতে বলে। দ্রুত বাড়ি আসার পর এ ঘটনা আমাকে জানানো হয়।
পরদিন প্রতিবেশী মো. মোর্শেদ নামের এক ব্যক্তিকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি আসামী উসমান ভূইয়াকে ডেকে আনেন। এসময় জানতে চাইলে আসামী উসমান কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনাটি স্বীকার করেন।
পরবর্তীতে বিষয়টি নরসিংদীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) জানানো হলে তাদের একটি দল এসে উসমানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত মো. জামান মিয়াকে আটক করা হয়।
নরসিংদীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি জানার সাথে সাথে আমরা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জামান মিয়া ও উসমান ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করি। তারা প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।