তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নিরাপত্তা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যাবহার এবং বিভিন্ন অপরাধ মুলক কার্যক্রম। আজকের লেখায় আমি আমাদের জিবনের প্রযুক্তির বিভিন্ন সমস্যার বাস্তবতা উল্লেখ করবো।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের আপামর জনসাধারণের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নাম ফেসবুক, কিন্তু আমরা এর যথেষ্ট ব্যাবহার জানিনা।
না বুঝে না জেনে ব্যাক্তিগত বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সবার সাথে শেয়ার করে থাকি। অচেনা অপরিচিত আইডির সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যাই। পেইজ খুলতে পারিনা, গ্রুপ খুলতে পারিনা, অনলাইনে বিজনেস প্লাটফর্ম গড়ে তুলতে পারিনা। যার ফলে অযথা স্ক্রল করে সময় কাটাতে পছন্দ করি।
এক্ষেত্রে আমাদের সবার উচিৎ বুঝেশুনে ফেসবুক ব্যাবহার করা এবং তার প্রতিটি কনটেন্ট সম্পর্কে সঠিক ধারনা থাকা।
অনেক সময় দেখা যায় প্রাকৃতির বিভিন্ন নামে বা ব্যাতিক্রম শব্দ ব্যাবহার করে, উল্টো পাল্টা ছবি দিয়ে ফেসবুক ব্যাবহার করে থাকি, এটা মোটেই ঠিক নয়। নিজের প্রকৃত নাম এবং সঠিক তথ্য উপাত্ত দিয়ে আইডি খুলতে হবে।
তার সাথে মেইল এড্রেস সংযুক্ত করুন। সমস্যা না থাকলে সেলফোন নাম্বার দিতে পারেন। এতে আপনাকে জানতে বুঝতে সহজ হবে।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, ফেসবুক আপনাকে অনেক নতুনদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে।
সুতরাং হাস্যরসাত্বক, কমেডিয়ান বা আজেবাজে পোস্ট না করে গঠনমূলক পোস্ট করুন।
এতে আপনাকে মুল্যায়ন করতে সুবিধা হবে।প্রয়োজনীয় এবং নিজের প্রাত্যহিক জিবনের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন সাইড গুলোতে লাইক দিয়ে রাখুন।
অযথা কোন পেইজে লাইক দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। পেইজটি ভেরিফাইড করুন,এবং স্বচ্ছ রাখুন। অন্য কোন সাইডে ঢুকে পড়লে সাইডগুলো ব্লক করে দিন।
কোন বিষয় বা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গ্রুপ খুলতে পারেন এবং সেখানে নিজের অভিমত,মতামত গ্রুপের মেম্বারদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
পাবলিক গ্রুপ এবং প্রাইভেট গ্রুপ কখনো একাকার করবেন না ফেসবুকের গোপনীয় যে বিষয় গুলো রয়েছে তার অন্যতম হলো পাসওয়ার্ড। হেকার সবসময় পাসওয়ার্ড খুজে বেড়ায়, আর এজন্য একজন ফেসবুক ব্যাবহারকারিকে অবশ্যই শক্তিশালী একটা পাসওয়ার্ড খুজে নিতে হবে।
পাসওয়ার্ড হতে হবে ১৪ ডিজিটের, সেখানে থাকবে অক্ষর, সংখ্যা,সিম্বল বা প্রতীক।
কিন্তু নিজের নামের সাথে মিলিয়ে কোন শব্দ বা অক্ষর ব্যাবহার করা যাবেনা।
অন্য কারো পার্সোনাল ডিভাইসে নিজের আইডি অপ্রয়োজনে লগ-ইন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কাউকে নিজের আইডি ওপেন করে দিয়ে দেওয়া যাবেনা। তাতে দুই প্রকার সমস্যা হতে পারে।
১. আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য উপাত্ত ঘাটাঘাটি করবে
২. আপনার আইডি থেকে অপরাধ বা কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করবে।
ফেসবুক চালানোর ক্ষেত্রে সামাজিক এবং আদর্শিক মুল্যবোধ থাকতে হবে। অপ্রকৃতিস্থ কোন আচরণ করা বা কাউকে খাটো করে কমেন্ট করা।
প্রতিবাদ মুলক স্টেটাস দিয়ে সামাজিক গোলযোগ পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, কাউকে হেয়প্রতিপন্ন করা এসব থেকে বিরত থাকতে হবে।
সংযোগ আছে, কিন্তু যোগাযোগ নেই এই নীতি থেকে বের হয় ফেসবুকে আপনার আত্মীয় অনাত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশী সবার খোঁজখবর রাখুন।
তাতে সময়কে সঠিক ভাবে কাজেও লাগাতে পারবে। অনেক উপকারভোগীও হওয়া সম্ভব।
মেসেজের মাধ্যমে কেউ কোন প্রলোভন দেখিয়ে চেটিং করলে বা সুযোগ সুবিধার আশ্বাস দিলে তার কথায় নিজেকে বিলিয়ে দিবেন না। বিদেশি কোন বন্ধু নতুন করে বন্ধুত্ব করতে চাইলে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। তার অবস্থান নিশ্চিত করুন, তার তথ্য উপাত্ত সঠিক ভাবে যাচাই-বাছাই করে তারপর কথপোকথন করবেন।
গুজব ছড়িয়ে সবাইকে চমকে দেওয়া ফেসবুকের আরো একটি ব্যাধি। এ থেকে আমাদের সজাগ সচেতন থাকতে হবে। অতিরিক্ত জনপ্রিয়তার আশায় ভুল তথ্য শেয়ার বা প্রকাশ করে জনমনে আতংকিত করা আইসিটি অপরাধ, সুতরাং এটা আমাদের পরিহার করতে হবে।
কমেন্ট সেকশনে কেউ কাউকে গালি দেওয়া, বাজে মন্তব্য করা,খাটো করে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে হেয়প্রতিপন্ন করা খুবই বাজে কাজ,এটা পরিহার করতে হবে।
ফেসবুকে অনেক প্রকার রিয়েক্ট রয়েছে, এর যথোপযুক্ত ব্যাবহার করতে হবে। হাহা রিয়েক্ট ব্যাবহারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতন এবং সতর্কতা অবলম্বন করুন। রাস্তা ঘাটে ভলিউম দিয়ে গান শুনা,ছবি দেখা,উচ্চ স্বরে কথা বলা,মসজিদে, মন্দিরে মোবাইল সাইলেন্ট না করা এগুলো সঠিক নয়। বিষয় গুলো আমাদের বাস্তব জিবনের বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে। সুতরাং বিষয় গুলো বিবেচনা করে আমাদের পরিবর্তন এখন সময়ের দাবী