জীবিকার লক্ষ্যে মানুষ এখন পাড়ি জমাচ্ছে শহরের উদ্দেশ্যে , যার ফলে ছোট হচ্ছে পরিবার । এই ছোট পরিবারে শিশুরা বেড়ে উঠছে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে। এর ফলে শিশুরা আসক্ত হয়ে পড়ছে এই ডিজিটাল ডিভাইসের উপর। এক জরিপে দেখা গিয়েছে শহরে বসবাস করা শিশুদের মাধ্যে ৭০% শিশু এখন ডিজিটাল ডিভাইসের উপর আসক্ত। এই ভয়াবহতার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট কারন রয়েছে, যা নিম্নরুপঃ
১। খেলার জায়গার অভাবঃ শিশুদের মানসিক বিকাশে খেলাধুলা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। খেলাধুলার মাধ্যমে একজন শিশু তার সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিইয়ে থাকে, যা এখন দুর্লভ।
২। যোগাযোগ বৃদ্ধিঃ বর্তমানে শহরের পরিবার গুলো এমন হয়ে গেছে যে, তারা তাদের প্রতিবেশির খবর ও নেয় না। যার ফলে এক পরিবারের শিশুদের সাথে অন্য পরিবারের শিশুদের যোগাযোগ হচ্ছেনা। এর ফলে শিশুদের মধ্যে তথ্যের বিনিময় হচ্ছেনা। বাড়ছে মানসিক চাপ।
৩। অতি শাসনঃ একজন শিশু যখন আশেপাশের কারো সাথে মিশতে পারে না , তখন সে বুঝেনা কোনটা ভাল কাজ আর কোনটা মন্দ। তখন সে তার কাছে যা আনন্দ দায়ক তা নিয়েই ব্যস্ত থাকে ।এর ফলে বাড়ে শাসনের মাত্রা।
৪। বাবা-মার অনুসরণঃ বাবা-মা যখন তার শিশু সন্তানের সামনে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে তখন তার মনেও এই ডিভাইসের প্রতি কৌতুহল বৃদ্ধি পায়। যখন এই ডিভাইসের মধ্যে কোনো হাসির দৃশ্য দেখে তারা হাঁসে তখন তার কৌতুহল আরো বৃদ্ধি পায় । যার পরিনতি হয় ভয়াবহ।
৫। সংসারে অশান্তিঃ শিশুর বাবা-মা যখন ঝগড়া করে তার প্রভাব সরাসরি শিশুর উপর পরে। শিশুর মার প্রতি বাবার রাগ বা বাবার প্রতি মায়ের রাগ শিশুর উপরেই মেটানো হয়। এর ফলে শিশুর মস্তিষ্কে একটা নেগেটিভ প্রভাব তৈরি হয়। সে আর তার বাবা-মার প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্ধা বোধ রাখেনা।
এর থেকে পরিত্রাণের উপায়ঃ
শিশুদের জন্য গড়ে তোলতে হবে পর্যাপ্ত খেলার ব্যবস্থা। প্রত্যক বাড়ির ছাদকে করতে হবে খেলার মাঠ। শিশুদের মধ্যে ইন্টার কমিউনিটি বৃদ্ধি করতে হবে। শাসনের মাত্রা কমাতে হবে। অহেতুক শাসন করা যাবে না। শিশুদের সামনে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না। সংসারে অশান্তি থাকলে শিশুদের উপর মানসিক চাপ পরবেই। তাই পারিবারিক কলহ ঝগড়া বিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে। একজন শিশুর মানসিক বিকাশে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রাখে বাবা-মা। তাই এই ক্ষেত্রে বাবা-মাকে তাদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।