দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। অনেকেই বলছেন, লকডাউন কিংবা সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলায় করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বুলেটিনের হিসাবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে অনেকেই বলছিলেন, নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হলে শনাক্তের হার বাড়তে পারে।
হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতালে করোনা রোগী শনাক্ত করার সুযোগ রাখায় এর আগে সীমাবদ্ধতা দেখা দেয়। এরপর পরীক্ষার ক্ষেত্র বাড়ানো হলেও নমুন পরীক্ষার গতি বা রোগী শনাক্তের কার্যক্রম খুবই ধীর। অনেক পরীক্ষাগারের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবার কয়েকদিন করে লাগছে পরীক্ষার ফলাফল পেতে।
এদিকে, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে সোমবার (১৮ মে) দিনটিতে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। বলা যায়, আগের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ শনাক্তের ঘটনা ঘটেছে। তবে শনাক্তের এই হারের সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার মিল দেখা গেছে। এদিনে সবচেয়ে বেশি নতুন পরীক্ষার ফলাফল থেকে সবচেয়ে বেশি শনাক্তের রেকর্ড পাওয়া গেছে। অর্থাৎ নমুনা পরীক্ষা বেশি হওয়ায় শনাক্তের হারও বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের ৪২টি ল্যাব থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৯২৩টি নমুনা। তার মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৮৮টি। ফলে শনাক্ত হয়েছে একদিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০২ জন।
এর আগের দিন রোববার (১৭ মে) পরীক্ষা করা হয়েছিল ৮ হাজার ১১৪টি নমুনা। যা সংখ্যায় আজকের চেয়ে ১ হাজার ৬৭৪টি কম। আর শনাক্তের হারও কমে গিয়েছি। পরদিন টেস্ট বাড়ানোয় শনাক্ত বেড়েছে ৩২৯টি। ফলে সোমবার মোট পরীক্ষায় শনাক্তের হার প্রায় ১৬.৩৭ শতাংশ। যেখানে আগেরদিন মোট পরীক্ষায় সংক্রমণের হার ছিল ১৫.৬৯ শতাংশ।
এরআগে শনিবার টেস্ট করা হয়েছিল মাত্র ৬ হাজার ৭৮২টি। ফলে শনাক্তও কমে দাঁড়িয়েছিল মাত্র ৯৩০ জনে। সুতরাং একদিকে নমুনা পরীক্ষা বাড়ায় যেমন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে সংক্রমিত ব্যক্তিদের মাধ্যমেও মোট সংক্রমণ বাড়ছে। অনেক বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন সময় বলেছেন পরীক্ষা বাড়ার সাথে সাথে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক বলেছিলেন এ মাসের মধ্যেই নমুনা পরীক্ষা ১০ হাজারে উন্নীত করা হবে। এমন ঘোষণার পরই নমুনা পরীক্ষা বাড়ানো হলো।