নরসিংদীর চিনাদী বিল: শরতের এক রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে ডিঙি নৌকায় ভাসছেন আপনি । মৃদু বাতাসের তালে হেলেদুলে চলছে নৌকা ,দুপাশে শতশত পদ্মফুল । ফুলের পাপড়ি ছুয়ে যাচ্ছে আপনার বাহু , সাথে নাড়া নিচ্ছে হৃদয়কে। একটু দূরেই ছোট নৌকায় বসে বড়শির ছিপ ফেলে নজর রাখছে কয়েকজন । তার পাশেই চলছে কুনোজাল দিয়ে মাছ ধরা । জেলেদের মধ্যে কেউ কেউ গেয়ে ওঠছে ভাটির পুরুষ শাহ আবদুল করিমের সেই অনবদ্য সংগীত , ”আমি কুলহারা কলঙ্কিনী … ”
এমন দৃশ্যকে বাস্তবে রুপদান করতে হলে আপনাকে ছুটে আসতে হবে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার পদ্মবিলে । স্থানীয়ভাবে যাকে চিনাদি বিল নামে ডাকা হয় ।
উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে দুলালপুর ইউনিয়নের মানিকদী, শিমুলিয়া, দুলালপুর, ভিটি চিনাদী ও দরগারবন্দ এ পাঁচটি গ্রামের মিলনস্থলে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত এই নরসিংদীর চিনাদী বিল। প্রায় ৫ শত ৫০ বিঘা আয়তনের স্বচ্ছ পানির এই বিলজুড়ে রয়েছে বক, চিল, মাছরাঙা, পান কৌড়ি, বালিহাঁস ইত্যাদি পাখির বিচরণ ক্ষেত্রসহ প্রাকৃতিক দৃশ্য ও নীল আকাশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য ।
নয়নাভিরাম এই দৃশ্য উপভোগ করতে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীরা ভিড় করে প্রতিবছর। তাদের কেউ কেউ ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ান নরসিংদীর চিনাদী বিলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে , কেউ কেউ আবার পদ্মফুলের সাথে আলোকচিত্রের খেলায় মেতে ওঠেন । ছুটির দিন কিংবা যেকোনো অবসরে পরিবার পরিজন অথবা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন আপনিও।
সড়কপথে রাজধানী শহর ঢাকা থেকে নরসিংদীর দূরত্ব ৫৭ কিমি.। এই বিলে পৌছাতে হলে আপনাকে নামতে হবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানার মোড় অথবা ইটাখোলা মোড়ে। সেখান থেকে সিএনজি কিংবা অটোতে করে পৌছাতে হবে কাঙ্খিত গন্তব্যে। বিলে ঘুরাঘুরির জন্য ঘাটে নৌকা পাবেন , সেক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায় আপনাকে গুনতে হবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।