নারায়ণগঞ্জে তল্লা বাইতুস সালাম জামে মসজিদে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের দগ্ধ হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন ২৬ জনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাম জামে মসজিদে গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। দগ্ধ মুসল্লিদের বেশির ভাগেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৩৮ জনকে ভর্তি করা হয়। ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছিলেন তাঁদের সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক এবং তিনি তাদের মধ্যে ১১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
গতকাল এশার ফরজ নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকে যখন সুন্নত নামাজ পড়ছিলেন সে সময়েই হঠাৎ গ্যাসের আগুনের সঙ্গে একযোগে বিস্ফোরণ ঘটে মসজিদের ছয়টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র-এসিতে। এর আগে থেকেই মসজিদে গ্যাসের পাইপ থেকে ছিদ্র দিয়ে গ্যাস লিক করে আসার অভিযোগ ছিল। গন্ধ পাওয়া যেত গ্যাসের।
অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের পর মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়াহুড়ি করে অনেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে যায়। ততক্ষণে বেশির ভাগ মুসল্লি দগ্ধ হন। মুসল্লিরা আর্তচিৎকার করতে করতে মসজিদের বাইরে বের হন। মসজিদের আশপাশে সড়কে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে তাঁরা গড়াগড়ি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধদের শরীরের ৬০-৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, মসজিদে ৪০ থেকে ৫০ জনের মতো মুসল্লি ছিলেন। ওই সময় মসজিদে বিদ্যুৎ ছিল না। বিদ্যুৎ আসার পরপরই এসিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপরই মসজিদে বিদ্যুৎ চলে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আরেফিন জানান, ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৯ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এর আগে স্থানীয় লোকজন বেশির ভাগ দগ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। দগ্ধদের অবস্থা এত খারাপ ছিল যে তাঁদের শরীরে হাত দেওয়া যাচ্ছিল না।
পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশর অ্যান্ড মেইনট্যানেন্স) লে. ক. জিল্লুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মসজিদটি থাই গ্লাসে আবদ্ধ ছিল। নিচ দিয়ে যাওয়া গ্যাসের পাইপের লিকেজ থেকে গ্যাস জমছিল। এই কারণে সম্ভবত বিস্ফোরণ ঘটেছে।জানান তিনি সম্ভাব্য অন্যান্য কারণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
