রায়পুরায় পানিতে ডুবে ৭ বছরের শিশুর মৃত্যু

আগের সংবাদ

সুই-সুঁতোর বাহারী ফুলে রঙিন যাদের জীবিকা

পরের সংবাদ

সন্তান নিয়েও বিসিএস জয়ের গল্গ রায়পুরার মেয়ের

মোঃ ফরহাদ আলম, স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২০ , ১২:১৫ পূর্বাহ্ণ

সংকল্প, দৃঢ় প্রচেষ্টা ও মহান সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ! যে মানুষের মাঝে এই তিনটি জিনিস বিদ্যমান, কোন বাধায় তাকে পরাস্ত করতে পারেনা। সাফল্য তাকে হাতছানি দিবেই। পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী লেখিকা জেন স্মাইলি বলেছিলেন “আমার অভিজ্ঞতা বলে শ্রেষ্ঠ মোটিভেশন হলো সত্যিকার ইচ্ছা। সত্যিকার ইচ্ছা থাকলে কোন বাধাই মানুষকে থামাতে পারেনা”।

শিমুল আক্তার! স্ব-ইচ্ছাকে লালন করে বিজয়ী হওয়া একটি নাম। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ (নয়াহাটি) গ্রামের জয়নাল আবেদিন ও আম্বিয়া দম্পতির জ্যৈষ্ঠ কন্যা তিনি। ৫ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। গ্রামের বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ভর্তি হন হাসনাবাদ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাবা-মা সহ ৭সদস্যদের পরিবারের সকল কাজ-কর্মের মাঝেও বিদ্যালয়ে ধরে রেখেছেন নিজের কৃতিত্ব। মধ্যবিত্ত পরিবার! নানান প্রতিকূলতার মাঝেও এক মূহুর্তের জন্য স্বীয় অধ্যয়ন ও লক্ষ্য থেকে পিছুপা হয়নি। ২০০৯ সালে এসএসসি পরিক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।

তারপর নরসিংদীর আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরিক্ষায়ও কৃতিত্বের ধারা অব্যাহত রাখেন। নারী জাগরণের দূত বেগম রোকেয়ার মতো মাত্র ১৮বছর অর্থাৎ এইচএসসি পরিক্ষার পরেই পারিবারিক ভাবে মাহবুবুর রহমান নামে এক কলেজ শিক্ষকের সাথে বিবাহ সম্পন্ন হয়। অনার্সে ভর্তি হন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)। প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় প্রথম সন্তানের মা হন। জীবন সংগ্রামের গতি যেন দিন দিন বেড়েই চলছে, কিন্তু নিজের লক্ষ্য থেকে নড়তে তিনি একদম রাজি নন। “সমস্যা তোমাকে থামিয়ে দেয়ার জন্য আসেনা। সে আসে, যাতে তুমি নতুন পথ খুঁজে পাও” রবার্ব এইচ. স্কুলারের সেই মহান উক্তি যেন তার সংগ্রামের অনুুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করল।

একদিকে পরিবার অন্যদিকে সুদূর ময়মনসিংহে নিজ বিদ্যাপীঠ, শোনতেই যেন বুক ধাপড়ে উঠে। কিন্তু স্বামী মাহবুবুর রহমানের দৃঢ় সহযোগীতা ও অনুুপ্রেরণায় তিনি বাকৃবি থেকে প্রথম বিভাগে অনার্স সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য বিসিএস এর জন্য সমান তালে চলছে প্রস্তুতি। ২০১৯সালে উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে মাস্টার্স শেষ করেন।

শিমুলের চাকরী জীবনের সূচনা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার হিসেবে। তাতেও কি তিনি থেমে যান? না! অংশ নিলেন স্বপ্নের ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় এবং প্রথম পছন্দ বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে (সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) সুপারিশপ্রাপ্ত হন। এভাবেই নিজের প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে সফলতাকে তিনি নিয়ে আসেন নিজ হাতের মুঠোয়।

নকি