নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার পারুলিয়া গ্রামে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মোগল আমলের প্রায় ৩০১ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক দরগাহ্ মসজিদ আজও কালের সাক্ষী হয়ে আছে।
নরসিংদী সদর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে পলাশ উপজেলার পারুলিয়া গ্রামে মসজিদটি ১১২৬ হিজরিতে নির্মিত হয়েছিল। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট ও মজবুত পাথরের পিলারের ওপর তৈরি মসজিদটি এখনো শক্ত সামর্থ্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মসজিদটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরবর্তীতে সংস্কার করা হয়েছে।
প্রায় ২০ বিঘা জমির মাঝে একটি মাজার, একটি অজুখানা, ৪টি পুকুর নিয়ে পারুলিয়া দরগাহ্ মসজিদটি অবস্থিত। এই মসজিদটি স্থাপত্য শৈলীর একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন হয়ে আছে নগর নরসিংহপুর (পারুলিয়া) গ্রামে।
সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে মহেষওয়ার্দী বর্তমান পারুলিয়া গ্রাম অঞ্চলটি স্থানীয় প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। সেখানে একজন নায়েবী দেওয়ান শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। সেই দেওয়ানের নাম ছিল শরিফ খাঁ। এই মাজারে দেওয়ান শরীফ খাঁ ও তার স্ত্রী জয়নব বিবির কবর রয়েছে। দেওয়ান শরীফ খাঁ এবং জয়নব বিবিই পারুলিয়া দরগাহ মসজিদটি নির্মাণ করেন।
ঈশা খাঁর বংশধর দেওয়ান শরিফ খাঁ ছিলেন এক ব্যতিক্রমী মানুষ। তিনি রাজকীয় ক্ষমতা, অতুল বিত্ত ত্যাগ করে দরবেশি জীবনযাপন করতেন। জমিদারী থেকে অর্জিত সব অর্থই তিনি ধর্মীয় কাজে ব্যয় করতেন। পারুলিয়ার একটি জঙ্গলময় স্থান বেছে নিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী জয়নব বিবি একটি ধর্মীয় আশ্রম, ভজনালয় ও একটি দর্শনীয় মসজিদ নির্মাণ করেন। শরিফ খাঁ ও তার স্ত্রীর মৃত্যুর পর ভজনালয়ের পাশেই তাদেরকে সমাধিস্থ করা হয়।
তাদের রেখে যাওয়া মোগল আমলের পারুলিয়া দরগাহ্ মসজিদ আজও অক্ষত আছে, যা এখন পারুলিয়া আউলিয়া দেওয়ান শরিফ খাঁন শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিত। এই মসজিদটি দেখার জন্য এবং মাজার জিয়ারত করার জন্য এখনও অনেক দর্শনার্থী এখানে ভীড় জমায়।
নরসিংদী মিরর/এফএ