মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী স্মৃতি সম্মাননা-" পেলেন শফিউল আজম কাঞ্চন

আগের সংবাদ

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের প্রদীপ প্রজ্জ্বলন

পরের সংবাদ

আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

মো. রাসেল আহমেদ, নরসিংদী সদর

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২০ , ১:১৮ অপরাহ্ণ

আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।আজকের এই দিনে আমরা গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জাতির সেই

শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, যাঁদের আমরা হারিয়েছি স্বাধীনতাসংগ্রামের সূচনা থেকে শুরু করে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগমুহূর্ত পর্যন্ত।

স্বাধীনতাযুদ্ধের শুরু থেকেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে হত্যাযজ্ঞের সূচনা করেছিল, একেবারে শেষ দিকে এসে পরাজয়ের আগমুহূর্তে তা রূপ নেয় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তা তখন তাদের এদেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় বেছে বেছে হত্যা করেছিল জাতির অগ্রণী শিক্ষক, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের। এসব হত্যার কারণটি স্পষ্ট, পরাজয় নিশ্চিত জেনে তারা চেয়েছিল স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাওয়া দেশটিকে মেধায়-মননে পঙ্গু করে দিতে।

 

বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পিত ঘটনার সঙ্গে এ দেশেরই কিছু মানুষ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী শক্তি রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যদের সক্রিয় সহযোগিতার কারণেই এতটা ব্যাপক ও পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ চালানো সম্ভব হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এই বাহিনীগুলোর সদস্যরাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুদ্ধিজীবীদের উঠিয়ে এনেছেন; তুলে দিয়েছেন পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজেরাই হত্যাযজ্ঞ সম্পন্ন করেছেন। আমাদের

জন্য এটা গ্লানি আর দুর্ভাগ্যের বিষয় যে সেই বিশ্বাসঘাতকদের অনেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিতে ও সমাজে পুনর্বাসিত হয়েছেন, কেউ কেউ মন্ত্রীও হয়েছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অধ্যাপক জি সি দেব, মুনীর চৌধুরী, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, ড. মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, রাশেদুল হাসান, ড. আনোয়ার পাশা, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, নিজামউদ্দীন আহমেদ, গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. আলীম চৌধুরী, সাহিত্যিক সেলিনা পারভীনসহ আরো অনেক সূর্য সন্তানকে হারিয়েছি।

দীর্ঘ দিন পরে হলেও স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যারা বুদ্ধিজীবী হত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনে ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের বিচার কার্য সম্পন্ন হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে আব্দুল কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামানের মত মানবতা বিরোধি অপরাধীদের শাস্তি হয়েছে। এদের শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমরা কিছুটা হলেও দায় মুক্ত হতে পেরেছি।