নরসিংদী সদরে ননএমপিও কলেজের সংখ্যা ত্রিশের অধিক। এসব কলেজে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৫০০। টানা ৮ মাস দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। দীর্ঘ বিরতিতে কেমন আছেন শিক্ষকেরা? যারা প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জ্ঞানের দরজা খুলে দিচ্ছিলেন, তাদের দরজার ভেতরের খবর কি কেউ রাখছেন? না কেউ রাখছেন না। এমনকি যে সব প্রতিষ্ঠানে তারা কর্মরত ছিলেন ঐসব প্রতিষ্ঠানের কর্তারাও না।
তাহলে কিভাবে চলছে একজন শিক্ষকের দৈনন্দিন জীবন? তিনি কি স্বাচ্ছন্দ্যে আছেন? নিশ্চয় না! এমন অনেক শিক্ষক আছেন যিনি সারাজীবনের সকল সঞ্চয় এ করোনাকালে ব্যয় করেন কারন তিনি তো কারো কাছে হাত পেতে নিতে পারেন না আবার কেউ তার হাঁড়ির খবরও রাখেনা।
দীর্ঘ দিনের মধ্যে নামমাত্র সরকারী প্রণোদনা পেয়েছেন ননএমপিও শিক্ষক। আজ দেশের সরকারি-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠান খোলা। পুরোদমে চলছে অফিস-আদালত!শুধু তালা ঝুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
তবে সরকারী ও এমপিও শিক্ষকেরা ঠিকই ঘরে বসে সমানতালে বেতন ভাতা পাচ্ছেন। বঞ্চিতদের কাতারে রয়েছেন ননএমপিও শিক্ষক। এটা কি ধরনের নির্মমতা, কেমন অবিচার? প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। সরকারি ও এমপিও শিক্ষকদের থেকে কোনো অংশেই তারা পিছিয়ে নেই। তাদের মেধা-মননের দ্বারা প্রতিবছর কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার দ্বার প্রান্তে পৌঁছে।
শিক্ষার আলোকবর্তিকাবাহী এসব মহান শিক্ষকদের জন্য কি কারো কিছু করার নেই? সমাজের বিত্তশালী মহল এত এত ত্রাণ দিলেন, এত এত অসহায়দের সাহায্য দিলেন কিন্তু একবারের জন্যই কি মানুষ গড়ার কারিগরদের কথা মনে পড়লো না আপনার?
সরকারের প্রতি দাবী এ পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলি খুলে দেন। খবর নিয়ে দেখুন যাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছিলেন তারা কেউ ঘরে বসে নেই। সবাই ছুটছে চারিদিকে। পঙ্গপালের মত জটলা বেঁধে দৌড়াচ্ছে। দেশের দর্শনীয় স্থানগুলি পর্যবেক্ষণ করুন দেখবেন সবগুলিই কানায় কানায় পূর্ণ। এসব দর্শনীয় স্থানে পর্যটক হিসেবে ভীড় করছেন শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ। শিক্ষার্থীরা দিগ্বিদিক ছুটলে যদি করোনা আক্রান্ত না হয় তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসলে করোনায় আক্রান্ত হবে এমন বিবেচনাহীন সিদ্ধান্ত কেন?
সরকারের কাছে দাবী, হয় ননএমপিও শিক্ষকদের কে নিয়মিত আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করুন আর না হয় যতদ্রুত সম্ভব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন।
আমাদের পিঠ দেয়ারে ঠেকে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষক পেশা বদল করে বিভিন্ন কাজের দিকে ঝুঁকছেন উনারা সকলেই প্রতিভাবান শিক্ষক। ইংরেজি আর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা টিউশন করিয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছেন তবে সবার পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সব দিক বিবেচনা করে ননএমপিও শিক্ষকদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন।